তিক্ত অধিবিদ্যা

প্রত্যেক প্রণীরই একটি করে পেট থাকে কিন্তু ক্ষুদা থাকে ভিন্ন ভিন্ন। কারও ক্ষুদা ভাতের; কারও ক্ষমতার; কারও অর্থের; কিংবা কারও আবার সুনামের। ক্ষুধার জ্বালা অনেক কষ্টের হয়। দুর্ভীক্ষের অনলে পুড়ে যারা ছাই হয়েছে, তারা বুঝে ক্ষুধার কি যন্ত্রনা।শরীর দুর্বল হয়ে পরে, চোখ ঝাপসা-অন্ধকার মনে হয়; মন মানসিক খারাপ থাকে; মেজাজ উগ্র থাকে। সুন্দরকে অসুন্দর মনে হয়, অসুন্দর কে আরও কুৎসিত লাগে। অন্যের ভালো পরামর্শ গালি মনে হয়। ধর্মতত্ত্বকে ধর্ম-ষড়যন্ত্র মনে হয় আধিবিদ্যাকে মনে হয় পাগলামি। যারা সাহসী তারা মৃত্যুকে ভয় পায় না কারণ তাদের মন সংকীর্ণ নয়। সু শিক্ষা ও মানবতাবাদী জ্ঞান মানবের মন ও হৃদয়কে প্রসস্ত করে। যাদের অনেক কথা-বার্তায় অংশ গ্রহণ করতে হয়, তাদের দুই একটি ছোট বড় মিথ্যা কথার আশ্রয় নিতে হয় কারন এই মিথ্যাই একমাত্র তার সমগ্র কথার অলংকার ও গ্রহণ যোগ্যতা হতে পারে। মানুষের সাথে পোষা প্রাণীর মিল আছে। এরা যেভাবে কোন কিছু করে করে অভ্যস্থ হয় এবং অভ্যস্থ অভ্যাস পরিবর্তন করার জন্য সমপরিমান সময় ব্যয় করে; যে সময়ের মধ্যে অভ্যাস গড়ে উঠেছিল। তেলা মাথায় তেল দেওয়া যদি মানুষের স্বভাব হয় তবে মানুষ মূল্যবান বস্তুকে অমূল্যায়ন আর অমূল্যবান বস্তুকে মূল্যায়ন করে কেন? কারন মানুষ সুবিধাবাদী ও অনিশ্চয়তায় আস্বস্থ্য। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মানুষ প্রতিনিয়তই সংগ্রামশীল। কিন্তু তা খাদ্য অন্বেষনের জন্য নয়, কিভাবে কাকে সড়িয়ে দিয়ে তার পদে অধিষ্ঠত হওয়ার সুপরিকল্পনায়। মানুষ হেরে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তার বশ্যতা স্বীকার করে না। কারন সে তার নিজের সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন নয়। মানুষ এখন আর সাহিত্যের পাশাপাশি সময়ের আরাধনা করে না, সময়ের পাশাপাশি সাহিত্যের আরাধনা করে। এক সময়ের অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ অন্য সময়ে পাহলামী আর বোকামি জেনেও মানুষ তার কাজ বন্ধ করে না। কারণ অন্য কে গালি দিয়ে অপদস্থ করা মানুষের নিকৃষ্ট অভ্যাস। যার মধ্যে উপলব্দি,মূল্যবোধ ও বোধগম্যতা নেই সে মানুষ হতে পারে না। সে একটি প্রাণী তবে পশু যার অবস্থান কখনও সমাজে হতে পারে না। সুনাম অর্জন করতে অনেক সময় লাগে আর দুর্নাম অর্জন করতে একটি চোখের পলকই যথেষ্ট। ঠিক তেমনি অনেক দীর্ঘ ও মজবুত সম্পর্ক ভাঙ্গার জন্য অতি তুচ্ছ একটি মনমালিন্যতাই যথেষ্ট। ভুল আর অপরাধ যেমন এক নয় রাগ আর অভিমান এক নয়। একটি সু-সম্পর্কে অভিমান থাকতে পারে কিন্তু রাগ থাকে শত্রুতায়। নারীরা অদ্ভুদ প্রজাতীর হয় কারন তাদের অজুহাত গুলু নির্ভর করে ইচ্ছার উপর আর তাদের ইচ্ছা নির্ভর করে স্থান, কাল ও পাত্র বিশেষের উপর। জন্ম হতে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের সমগ্র জীবনটা একটি নাটক-সিনেমার প্রেক্ষাগৃহ। এখানেই প্রত্যেকেই যে যার যার অভিনয়ে ব্যস্ত।অভিনয়ের ছলে মানুষ মনের ভুলে নিজের সাথেও অভিনয় করে ফেলে। ফলে সে দুঃখ পায়। সে ব্যর্থ হয় কারন তার চাহিদা অফুরন্ত। তবুও মানুষ ক্ষুদার্থ কাকের মত, প্রতিনিয়ত ইচ্ছা পূরনের জন্য খাদ্যের অন্বেষনে ঘুরে বেড়ায় কেননা মানুষ এর জন্মই শুরু হয় ইচ্ছা ও দুঃখের মধ্য দিয়ে। মানুষ এক অদ্ভুদ প্রাণী। যে তার চেতনায় বিষ মিশিয়ে তার স্বার্থ আদায় করে। মানুষ তার নিজস্ব যুক্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য মিথ্যার প্রসঙ্গ সাগরে অগনিত তরী ভাসাতেও সর্বদা প্রস্তুত। যে লোক সন্ধান থেকে অনুসন্ধান করতে পারেনা , সে একজন অদক্ষ রাজার মত; সে প্রাচুর্যতায় থেকে প্রজার বোবার দর্শন উপলব্দি করতে পারে না। নিজের স্ত্রীর সাথে শুধুমাত্র রাগ দেখানো যেমন একজন কাপুরুষের কাজ, তেমনি দুর্বলচিত্ত লোকদের কাজ হল হেরে যাওয়ার ভয়ে ঠুঙ্ক ক্ষমতার অপব্যবহার করা। বস্তুবাদ পৃথিবীতে মানুষের সাথে বাদুরের যথেষ্ঠ মিল খুজে পাওয়া যায়।এরা উভয়ে অন্ধকারে চলাফেরা করে। উচ্চ আসন অধিষ্ঠিত কর্ণধারগণ অনেকটা পতিতাদের মত। পতিতাদের কাছে হাদীস যেমন ইতিহাস মনে হয় তেমনি উচ্চ পদবীগনদের কাছে অধিবিদ্যাকে মনে হল অ্যালজেবরা । তারা অসীম পথে যাত্রা শুরু করেন কিন্তু ইচ্ছা করলেও অন্য পথে যেতে পারেন না। কারন অন্য পথ ঐ পথের চেয়েও বিপদ জনক ও ঝুকিপূর্ণ। মোঃ হাবিবুর রহমান——-প্রধান সম্পাদক, Media STN